১.
ইমতিয়াজ মাহমুদের কবিতা একদমই ফালতু লাগে।
যারা তার কবিতা পছন্দ করেন তাদের সাহিত্য রুচিরে জাস্ট লঘু বইলা ছাইড়া দিলে এই রুচির আগাছায় দেশ ভইরা যাবে।
এদের রুচি চেঞ্জ করার চাকরিও তো আমরা করতে পারি না। তাইলে আমরা কী করব?
করব হইল, এই কবিতা যে ফালতু সেই আলাপটা বাজারে ছাড়ব। মানে ছাড়লাম।
সাহিত্য মানে এই--খারাপ যেইটা লাগে তারে খারাপ বলতে হবে। আর ভালরে ভাল।
ইমতিয়াজ মাহমুদের কবিতারে যারা ভাল বলে তাদের একপাক্ষিক গণতন্ত্র চর্চারে রক্ষা করার কার্যকর উপায় হইল যাদের কাছে তার কবিতা বাজে লাগে তাদের জন্যে সেইটা বলার অবস্থা তৈয়ার করা।
তা আমি করলাম। কিন্তু খালি আমিই এগুলি করব? আপনারা কবে মানুষ হবেন?
২.
কবি হিসাবে ইমতিয়াজ মাহমুদ যা লেখার তাই তো লিখবেন।
তার প্রতিভা ও বুঝ অনুসারে লিখবেন। এইটা চেঞ্জ করতে আমি বলতে যাব না। উনি শক্তিশালী কবি, তাও অস্বীকার করতে যাব না। তার অমিত শক্তি প্রয়োগে যেই জিনিস উৎপাদিত হইতেছে তা নিয়াও আমার আপত্তি নাই।
আমার কাজ তার পাঠকদের লইয়া।
যেহেতু ওনার কবিতা ফালতু ও শিশুতোষ লাগে এর সমালোচনা আমি করতে চাই না। বড়জোর বলা যায়, উনি গদ্য ছড়া লেখেন। এই ছড়াগুলির কবিতা হিসাবে পাঠকপ্রিয়তা আমাদের সাহিত্যরুচির জন্যে বিভ্রম সৃষ্টিকারী।
উনি যে প্রবল ভাবে জনপ্রিয় হইছেন তা তার পাঠকবর্গের একটা নির্দিষ্ট টাইপের রুচিবোধের জানান দেয়। সুবিধার জন্যে এই রুচির নাম দিলাম 'ইমতিয়াজ রুচি'।
সমাজে ও সাহিত্যে 'ইমতিয়াজ রুচি' কি সমস্যাজনক?
আমি তা মনে করি।
এই রুচিবোধটা সাংস্কৃতিক ভাবে লঘু, কিন্তু মুখ্য হিসাবে অবস্থান করতেছে।
সমাজে লঘু জিনিসের গুরু হিসাবে অবস্থান বা অবস্থানের সুযোগ একটা মিথ্যাচারের মতন।
যে মিথ্যাটা তৈরি করে কমবুদ্ধিওয়ালা লোকের বেশি ভোট বা অধিক সমর্থন।
কাজেই এই মিথ্যাকে নিয়ম, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ইত্যাদি বিভিন্ন লেবাস পড়ানো হয়। যেহেতু গণতন্ত্রের লেবাস পরা তাই আপনি ভাববেন এর বিরুদ্ধে বলার কীবা আছে?
কিন্তু আছে, ওই বলাটাও গণতন্ত্রই। এও নিয়ম তৈরি করতে পারে। এও দিতে পারে নতুন স্বাধীনতা।
যা স্থিতিশীল তাই সঠিক ভাবার কারণ নাই। নতুন সঠিক তৈরি করুন।
তো আমার দেখানোর বিষয় যে তার পাঠকদের রুচি আসলেই খারাপ বা লঘু। একে গুরুস্থান দেওয়া যাবে না।
তা কীভাবে দেখাব?
সেইটা ধীরে ধীরে দেখাব। অত তাড়া আমার নাই। বরং তার পাঠকদের রুচির বিষয়গুলি আমার কমেন্টে যে প্রতিফলিত হইতেছে তা জমা হইতে থাকুক।
'ইমতিয়াজ রুচি'র পাঠকদেরকে নিম্নরুচির দেখাইতে পারলে আমার ও আমাদের ও আমাদের সাহিত্যের প্রভূত লাভ।
সে লাভ আমি করতে চাই।
৩.
রুচি জাস্ট রুচি না, রুচি একটা পলিটিক্যাল পজিশন বা রাজনৈতিক আসন।
কাজেই যেই জনরুচি তার লাইক বা সমর্থনের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রে কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করে সেই রুচিরে চিহ্নিত ও সাইজ করতে হবে।
যার যার রুচি তার তার বটে; বিপরীতে যার যার রুচির সমালোচনাও তার তারই।
অর্থাৎ রুচি কোনো আসমানি বা হাওয়াই ব্যাপার নয় যে এর নিন্দা বা সমালোচনা করা যাবে না, কিংবা একে উৎখাত করা যাবে না।
প্রতিষ্ঠিত জনরুচিরে প্রশ্ন করেন, পাল্টা রুচি খাড়া করেন।.
৪.
পাঠকদের রুচিকে অসম্মান করা যাবে। আমি তো জননেতা হইতে আসি নাই যে পাঠক মানেই সোনার খনি ভাবতে হবে আমার! খারাপ রুচিকে খারাপ বলব।
পাঠকদের রুচি পরিবর্তন করার যে বাসনা তার নাম এনজিও বাসনা। এইটা আমার নাই। আমি পাঠকদের সাহিত্য রুচির বিচার করতে বসছি, সাহিত্যে যা করার সুযোগ ও দরকার আছে। সাহিত্যে কী গণ্য ও কী নগণ্য করতে হবে তা স্থির করার মাধ্যম পাঠক না। বরং সমালোচনা ও খণ্ডন।
৪/৩/২০২৩