কয়দিন আগে জানছি একটা ফ্রেইজ, কন্সপিরেসি অব সাইলেন্স। এরে দেখা মাত্র যে কয়জনের নাম মাথায় আসছে, মানে আমার চেনাজানা, তার মধ্যে প্রধানতম হইতেছেন রাইসু, ব্রাত্য রাইসু।
মনে হইতে পারে আমার কন্সপিরেসি থিওরিতে অবসেশন আছে, নাইলে হঠাৎ এ-নিয়া পড়লাম কেন। আসলে অমন কিছু না এই কায়কারবার। এইটা মানুষের প্রবৃত্তিজাত বিষয়, আলাদা করে বানানো থিওরি-ফিওরি না। মানুষের এ-রূপ সাইলেন্স মেকানিজম থাকে। রাইসুকে মানুষজন যা দেখায়।
মেহবুব খান
এইখানে অবশ্য মানুষজনের একটা ক্লাসিফিকেশন করা লাগে। মানে শ্রেণিতে শ্রেণিতে জামাতে জামাতে মানুষের তো ভাগবিন্যাস থাকেই। কোন মানুষজন রাইসুকে নিয়া সাইলেন্ট? আপামর মানুষ, যারা খিস্তি করে, লিঞ্চিং করে ফেসবুকে ব্লগে তারা না। রাইসুকে নিয়া সাইলেন্ট আসলে আদতে আর্টকালচারের মানুষজনই।
এই যে সাইলেন্স এইটা আমাকে টানছিল। সালটা দুই হাজার দুই হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠছি। আর্টকালচার ভালো লাগে, কবিতা করি কবিতা পড়ি। অমন একটা সময়। ওনার তখন একটাই কবিতার বই, ছাপাক্ষরে। তার সাথে আমার পরিচয় ঘটে।
পরিচয় ঘটাইছিল আমার এক বান্ধবী, সে নিজেও উত্তেজিত রাইসুর কবিতা নিয়া। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও এর বই বিশেষ করে বইয়ের গাড়িগুলা আমি এভয়েড করতাম। আজিজে যাইতাম, তাও এনোনিমাস হয়ে। তাই কবিদেরকে বিদ্বৎজনদেরকে অতটা চিনতাম না। সেই চেনাজানার কাজটা আমাকে ঘটায়ে দিছিলেন কবি জহির হাসান। ফলে দূরপাঠের কবি কাছের দেখায় পরিণত হইলেন দুইহাজার সাতে। ধানমণ্ডি লেকে। ওনার সাথে মানস চৌধুরীও ছিলেন সেখানে।
জহির হাসানের সুবাদে এমন রথীমহারথীদের সাথে আমার আলাপ পরিচয় হতে শুরু হইলো। আমি তাদেরকে দেখতাম, যেহেতু আমি মিতভাষী শুনতাম বেশি। রাইসুকে, ব্রাত্য রাইসুকে, আমার সেই মহারথীদের ভিড়ে মহা লাগলেও রথী লাগে নাই। মানে মনে হয় নাই যে উনি কোনো রথ চালাইতেছেন, রাস্তার ফুটপাথ দিয়াই হাঁটতেছেন, জমিনেই আছেন, এমন মনে হইছে।
এইখানে একটু জ্যামিতি নিয়া কথা বলি। উল্লম্ব জিনিশ আমি সবসময় আনুভূমিক দিয়া বুঝতে চাইতাম। উল্লম্ব দিয়া উল্লম্ব বুঝানোরে আমারে কাছে কাণ্ঠামি মনে হইতো। এক্ষণও হয়। ব্রাত্য রাইসুকে ফলত আমার আনভূমিক লাগছিল, উল্লম্বে দৃষ্টি দেওনের সময়েও।
ওনার সেই দেখার ভঙ্গি, ঘটানোর ভঙ্গি, আমারে টানছিল। এমনকি ওনার প্রেমজীবন নিয়াও তখন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতে বাতচিত হইতে থাকতো। আজিজে আরও যেকয়বার দেখা হইছে ওনার সাথে, চা পান হইছে, তখন ওনার বান্ধবীযোগ চক্ষে দেখছি। ওনার উপস্থিতিরে তা আরও ঈর্ষণীয় করে তুলতো, নিঃসন্দেহে।
রাইসুর এই যে চমৎকারিত্ব, সব বিষয়েই, তা তুলনাতীত। ওনারে দেখতে পাই এক্ষণ প্রোটোটাইপ ট্র্যাশ অনুপযুক্ত ইত্যাদি আখ্যা দিয়া লোকে নাজেহাল করতে চায়। তখন আরও বেশি করে আমার কাছে ওনারে তুলনাতীত মনে হয়। ওনার প্রতি যে সাইলেন্স অথবা খিস্তি তাও সবিশেষ প্রতিভাত হয়।
মেহবুব খান
ফেসবুকে ওনার পোস্টগুলা আমার ধারণা আমি দেশের বাইরে গিয়া প্রথম পড়তে শুরু করি। দুইহাজার তেরোতে। তর্কে যাইতাম প্রথমে, উনি আমারে একবার চড়াই সম্বোধন করে পরিহাস করছিলেন, আমিও ওনারে চড়াই বলছিলাম পাল্টা, এটুকু বাহাস খেয়াল আছে। ফেসবুক অনেক কিছুরে সহজলভ্য করছে। আমি ফেসবুকরে ডাকি পানের দোকান, চায়ের টঙ। সেই কঠিন আলাপরে এইখানে ঘটায়ে তোলার কাজটা রাইসু, ব্রাত্য রাইসু, করতে পারছেন। ওনার দেমাগ ও বাসনা ও শৈলী সমেত।…
(বাংলাদেশ থেকে যারা সাবস্ক্রাইব করতে আগ্রহী তাদের জন্যে লিংক)
(যারা বিদেশ থেকে বা কার্ডের মাধ্যমে সাবস্ক্রাইব করতে আগ্রহী তাদের জন্যে লিংক)