কথা বলার অধিকার অ্যান্ড ওকালতি অব ভলতেয়ার
"I disapprove of what you say, but will defend to the death your right to say it."
—Voltaire*
১.
অধিকার কথাটা একটা সার্বভৌমত্বের প্রতি দিকনির্দেশ করে।
মানে কেউ বা কিছু এই অধিকারটা দেয়।
যিনি অধিকার দিতেছেন তার অধিকার প্রদানের ক্ষমতাকে রিজেক্ট করে বা মান্য করে না এমন কাউকে অধিকার দেওয়াও যায় না।
যেমন ভলতেয়ারের আমলের অধিকারের মালিক ফ্রান্স অধিপতি কাউকে কিংডম অব ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অধিকার দিতে পারেন না।
সেই রকম দিলে কিংডম বইলা যেই ক্ষমতাকাঠামো, তার অর্থ থাকে না।
২.
তো যেই রাজা বিদ্রোহের অধিকার দিতে পারেন না তিনি কি বিদ্রোহের ঘোষণা দেওয়ার অধিকার দিতে পারেন?
না, পারেন না।
এই রকম দিলে কিংডম অব ফ্রান্সের কোনো সার্বভৌমত্ব থাকে না। আর সার্বভৌমত্ব না থাকলে অধিকার কে দিবে?
তাই যেই সার্বভৌমত্ব থিকা অধিকার লাভ করে অধিবাসীরা সেই সার্বভৌমত্ব যুক্তিসঙ্গত কারণেই তার অধিকৃতদের বা অধিবাসীদের সব ধরনের কথা বলার অধিকার দিতে সক্ষম হয় না।
কথা বলার অধিকার দেওয়ার ভলতেরিয়ান ডেথ পর্যন্ত ফাইট তাই হাস্যকর ভাবে কিংডম অব ফ্রান্সের সার্বভৌমত্ব স্বীকারের কুস্তি হইয়া দাঁড়ায়।
৩.
সুতরাং মানুষের কাজ অধিকার-নিরপেক্ষ এবং তার কথা বলাও কোনো অধিকারের উপর নির্ভর করে না।
আপনি যখন কোনো সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কথা বলবেন সেই কথা অধিকার-অনধিকারের বাইরে থিকাই বলবেন।
আপনি যদি শর্তাধীন বা বন্দি থাকেন তখনই কথা বলার অধিকারের অর্থ তৈরি হয়।
যিনি রাজা বা রাষ্ট্রের অধীন তার কথা বলার অধিকারও রাজা বা রাষ্ট্রেরই অধীন।
সুতরাং অধিকার-সঙ্গত কথা বলবে ভলতেয়ার অথবা তার রাজার বা চার্চের বা রাষ্ট্রের অনুগত অধিবাসী ও দাসেরা।
যেহেতু মানুষ ও তার কথা বলা অধিকারের আওতাধীন নয় তাই কারো কথা বলার অধিকারের পক্ষে দাঁড়ানোরও কিছু নাই।
বাকস্বাধীনতা ব্যাপারটাই একটা বৈশ্বিক ভণ্ডামি।
তাই রাজা, চার্চ, রাষ্ট্র বা ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াইকে বাকস্বাধীনতার লড়াইয়ে সীমিত করা মানে এই সমস্ত বিষয়ের স্বীকৃতির মধ্যে বাস করার পাসপোর্ট আদায় করা।
মানে হইল রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রূপ দাসত্ব বরণ করা।
এবং যিনি দাস তিনি কথা বলতে পারবেন কিনা, তা একান্তই প্রভু বা মালিকের আজ্ঞার বিষয়। আগে রাজা সেই আজ্ঞা দিতেন, এখন রাষ্ট্র দেয়।
তাইলে যিনি অধিকারের দাস তার কথা বলার অধিকার মানে দাসেরই কথা বলার আজ্ঞাপত্র। তাই এই অধিকারের মানে হইতেছে—নাগরিক বা দাস কী বলতে পারবে না তার সীমা নির্ধারণ।
ভলতেয়ার এই সীমা তৈরির ওকালতি করতেছেন।
কথা বলার অধিকার আদায়ের মাধ্যমে ফরাসি এই দার্শনিক ও ভদ্রলোক নাগরিকদের বিদ্রোহের সম্ভাবনাকে সাইজ কইরা দিতেছেন।
রাজার হইয়াই কাজ করতেছেন তিনি।
(*এই বক্তব্য ভলতেয়ারের নয় বলেও প্রচারিত আছে।)
(১৩/৫/২০১৭ - ১১/৮/২০১৭)