ইন্ডিয়া লইয়া আমেরিকার কী চিন্তা?
১.
ইন্ডিয়ারে চীনের সমান শক্তিশালী পরাশক্তি হইয়া উঠতে দিবে কি আমেরিকা?
আমার হিসাব বলে, না, কোনো ভাবেই দিবে না!
দুইটা সমান শক্তিসম্পন্ন প্রতিবেশী পরস্পরের সঙ্গে সত্যিকারের বিবাদে লিপ্ত হয় না।
পরাশক্তি হইয়া উঠতে পারলে চীন-ভারত পরস্পরের শত্রুর চাইতে বন্ধু হইয়া উঠবে বেশি। এই সম্ভাব্য বন্ধুত্ব আমেরিকার জন্য সর্বদাই বিপজ্জনক হুমকি।
২.
এদিকে বাংলাদেশ হইল ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও ভোটের রাজনীতিতে প্রতিবেশী ইন্ডিয়ার একটা বড় শক্তি বা হাতিয়ার।
কাজেই বাংলাদেশে ইন্ডিয়ার প্রত্যক্ষ প্রভাব, অর্থ ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসা কমাইতে পারলে ইন্ডিয়ার অর্থনীতি নিদারুণ ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তাদের সামরিক শক্তি ও অস্ত্র কেনার ক্ষমতা তাতে বাড়বে না নিশ্চয়ই।
ফাইনালি ইন্ডিয়া আর চীনের সঙ্গে একলা একলা পাল্লা দেওয়ার মত অবস্থায় থাকতে পারবে না। তুলনায় অনেক বেশি পিছাইয়া পড়বে তারা।
এইটা আমি যেহেতু জানি, আমেরিকা আরও ভাল জানে। চীনও জানে। এবং এইটা তারা উভয়েই চায়। উভয়ে বলতে আমেরিকা ও চীন।
৩.
বাংলাদেশে আরোপিত আমেরিকার সাম্প্রতিক স্যাংশন ও ভিসা রেস্ট্রিকশনের মূল লক্ষ্য গ্লোবালি ইন্ডিয়ার ক্ষমতা কমানোর প্রক্রিয়া শুরু করা।
তাদেরকে পরনির্ভরশীলতার মধ্যে রাইখা দেওয়া বা পরাশক্তি হইতে না দেওয়া।
ইন্ডিয়া সেই রকম অর্ধেক শক্তিসম্পন্ন বা হনু পরাশক্তি অবস্থায় চীনেরে সামাল দিতে গিয়া সর্বদাই আমেরিকার সঙ্গে গাঁটছড়া বাইন্ধা থাকবে। তখন তাদেরকে বাহ্যত অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থায় দেখবে বিশ্ববাসী ও ইন্ডিয়ানরা। খালি আমেরিকান থিংক ট্যাংক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আমার সহমত পাঠকেরা জানবে আসলে কী অবস্থা!
৪.
তাইলে আমরা ধইরা নিতে পারি, বাংলাদেশে আমেরিকার বর্তমান সব হস্তক্ষেপ কার্যত ভারতের বিরুদ্ধে সক্রিয় বিধিমালা—যে তোমরা বাংলাদেশে কী করতে পারবা ও কী পারবা না!
আমেরিকা ইন্ডিয়ারে পাশে চায় বইলাই তারা ইন্ডিয়ার মাতব্বরি কমানোর এই ক্ষতিটা করতেছে।
এই ক্ষতি মাইনা নেওয়া ছাড়া ইন্ডিয়ার সামনে আর কোনো উপায় আছে কি?
মনে হয় নাই।
৫.
আমরা যাদের পাশে রাখতে চাই আমরা তাদের ক্ষতি করি।
পাশে রাখতে চাই বইলাই তা করি। যাতে তারা তেমন বড় হইয়া না ওঠে, যাতে তারা আমাদের ছাড়াইয়া বা ছাইড়া না যায়!
৬/৬/২০২৩