কমিশনে বই বিক্রি কেন খারাপ?
কোনো প্রডাক্টের যখন যা দাম তার চাইতে কমে বিক্রি শুরু হয় তখন জনমনে ধারণা হয় যে জিনিসটা দোষযুক্ত, আকর্ষণহীন, পুরাতন।
এবং মালের বিক্রেতা অভাবে পইড়া, ভাত খাইতে না পাইয়া, এই মাল ছাইড়া দিতেছেন!
কমিশনে বই বিক্রির ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটে। নতুন বইগুলিরে কমিশন প্রদানের মাধ্যমে পুরানো বইয়ে পরিণত করেন পাবলিশার ও বিক্রেতারা।
ক্রেতাদের কাছে বইয়ের উৎপাদকদের অভাবী মনে হইতে পারে এর কারণে।
আর আপনারা তো দেখছেনই পাবলিশাররা কীভাবে সারাক্ষণ গলা শুকাইতে থাকে যে বই বেইচ্চা কোনো লাভ নাই!
দুঃস্থ বিজনেসম্যানের অভিনয় করতে থাকেন তারা। যাতে লেখকদেরকে রয়ালটি প্রদান করতে না হয়!
এছাড়াও পাবলিশার ধারণাটার সঙ্গে সরকারের কাছে বই গছানো সহ প্রিন্টিং এর সরকারি কাজ বাগানো ইত্যকার নানা ছলনার ধারণা কাজ করে।
আর অভাবী মানুষের জিনিস কিনতে কম আগ্রহী হয় ক্রেতারা। কোনো বাজারে একজন ধনী মানুষ ও একজন মধ্যবিত্ত কিন্তু অভাবী মানুষরে কবুতর বিক্রি করতে দিয়া এই পরীক্ষণটি করতে পারেন।
ক্রেতারা শুষ্ক গলার অভাবী মালিকদের মালের ব্যাপারে সন্দেহ ও খুঁতখুঁতানির মধ্যে থাকে।
২.
কমিশনে বই বিক্রি মানে লোভ দেখাইয়া দ্রব্য গছানো।
যাদের অনেক বেশি ভালবাসা নাই বইয়ের প্রতি, তারা বই কিনে কমে পাইতেছে সেই কারণে। ফলে এরা বই কিনে বাট পড়ে না। আর এভাবে প্রকাশকেরা তুলনামূলক বেশি দামে স্রেফ ছাপানো কাগজ বিক্রি করে, বই না।
ঘোষিত দামের চাইতে কম মূল্যে বই বিক্রির মাধ্যমে বইয়ের অবমাননা ঘটে। এইটা ঘটান বইয়ের প্রকাশকরা।
আমি তাদেরকে বলব, নিজেদেরকে উপরে ওঠান, শ্রদ্ধাপূর্ণ জায়গায় নিয়া যান।
বইয়ের দালাল বা ফড়িয়ায় পরিণত কইরেন না নিজেদেরকে।
বইয়ের মর্যাদা বাড়ানোই বই বিক্রির বা বইয়ের বাজার বাড়ানোর উপায়।
অতএব এক্ষুনি কমিশন প্রথা বন্ধ কইরা গায়ের দামে বই বিক্রি শুরু করেন!
এখনই হয়ত আপনার পুরানো কু অভ্যাস ছাড়তে পারবেন না, তবে খুব দ্রুতই আপনার কমিশন দেওয়ার খাইসলত ছাড়তেই হবে।
ক্রেতাদের ঘুষ দেওয়া বন্ধ করেন।
১৭/১/২০২৪