টুয়েলভথ ফেল: মিষ্টি একটা সিনেমা, তবে ভাল কিছু না
'টুয়েলভথ ফেল' মিষ্টি ছবি, তবে ভাল ছবি না।
এই সিনেমায় দরিদ্রদের অতি উপরে ওঠারে বিশেষ ভাবে কঠিন দেখানো হইছে। যা অ্যান্টি মোটিভেশনাল। এতে গরীব মানুষ আশা হারাইয়া ফেলবে।
কেননা বেশি উপরে ওঠাটা বিত্তশালীদের জন্যেও একই রকম আয়াসসাধ্য। এবং কম উপরে ওঠাটা দরিদ্রদের জন্যেও একটু কম কঠিনই।
এমনিতে গরীব মানুষ বিত্তশালী বা ক্ষমতাবান হইলে গরীব জনসমষ্টির কোনো লাভ হয় না। বরং বিত্তশালীদের উপকার হয় তাতে। সংখ্যায় তারা বাড়ে। এবং কীভাবে গরীবরে শাসন করতে হবে তার সূক্ষ্ম কৌশলগুলি কাজে লাগানো সহজ হয় গরীব জনগোষ্ঠি থিকা আসা সিভিল সার্ভেন্টদের কারণে।
২.
সিনেমায় ইন্ডিয়ার চম্বলের বিশৃঙ্খল এলাকায় রাষ্ট্রের হাত প্রসারিত করাই ছবির নায়কের আলটিমেট মোক্ষ দেখানো হইছে। দরিদ্রদের মধ্য থিকা চিটারি দূরীকরণ তার কর্ম ও দর্শন।
চম্বলের সাধারণ জনতার পরীক্ষার হলের চিটারি যে রাষ্ট্রীয় বিধি ব্যবস্থার চিটারির চাইতে কম ক্ষতিকর তা আমি মনে করি আপনারাও স্বীকার করবেন। কিন্তু নায়ক ছোট চিটারি লইয়াই চিন্তিত থাকতে চায়। বস্তুত অফিসার হইয়াও কেরানির এই কাজই তার বেশি পছন্দের। সে ছোট চিটারি সারাইতে জীবন উৎসর্গ করতে চায়--সেইটা সিনেমার ডাইরেক্টর মশাইও চান।
৩.
বলা যায় রাষ্ট্রের অচেতন বা আনকনশাস দরিদ্রদের শাসন করার জন্যে তাদের মধ্য থিকাই একজন প্রতিনিধি গইড়া তোলে এই সিনেমায়। যেই সৎ দালালটি রাষ্ট্রের আরেক পোষা কর্মচারীরে দিয়া উদ্বুদ্ধ হয়। তার নাম ভুইলা গেছি।
এখানে প্রজাদের সততারে গরীবী হঠানোর মাধ্যম হিসাবে দেখানো হইছে। অথচ গরীবী হঠাইতে প্রয়োজন রাজাদের বা রাষ্ট্রের উচ্চ পদধারীদের দুর্নীতির উচ্ছেদ। ছোট চিটারির তাতে অবদান নাই।
তো সেইটা না কইরা ছোটলোকদের সততারে গুরুত্ব দিলে অবিডিয়েন্ট চাকর শ্রেণী তৈরি হবে। যারা আলটিমেটলি কাজ করবে বড় দুর্নীতির সহায়ক যন্ত্র হিসাবে।
এভাবেই সাধারণ জনগণের সততা রাষ্ট্রীয় তথা কর্পোরেট সুশাসনের প্রাথমিক চাহিদা। যেই সুশাসন বড় দুর্নীতিগুলিরে সচল রাখার ও আরো লাভবান করার প্রধান শর্ত।
৭/১/২০২৪