"রাহুলের বাসায় মাঁখো আইছে!"—হোয়াই?
আগে বিদেশের উচ্চপদস্থ প্রেসিডেন্টরা আইলে গরীব ও ছোটলোক শিল্পীদের গান শোনাইতে ডাকা হইত। এখন মিডল ক্লাস শিল্পীদের বাসায় গিয়াই তারা গান শুনতেছেন।
সভ্য বিদেশগুলির এনজিও মডেলে বহুল চর্চিত গরীব বা ছোটলোক নির্ভরতা হঠাৎ কইমা যাওয়ার কারণ কী?
আমি একটা আন্দাজের কথা বলি।
হইতে পারে এতদিনে বিদেশীগুলি এবং তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বুঝতে পারছে, যেহেতু এইসব দেশের ক্ষমতা ও জনমতের নিয়ন্ত্রণ মিডল ক্লাসের হাতে তাই গরীব ঘৃণাকারী মিডল ক্লাসরে খুশি রাখতে গেলে, তাদের বিরোধিতাগুলিরে শুরুর আগেই সাইজ করতে চাইলে মিডল ক্লাসরেই খুশি রাখতে হবে! গরীবের বাসায় দৌড়াইলে হবে না।
মিডল ক্লাসের নিজের ও প্রাণের জিনিস রাহুল আনন্দের বাড়িতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর গমনে মধ্যবিত্ত দেশপ্রেমিকরা যত আনন্দিত ও হতবিহ্বলিত ছোটলোক কোনো গায়কের বাড়িতে গেলে কি তারা একই সংখ্যক খুশি হইতেন?
আমরা ধারণা তা তারা হইতেন না।
নতুন এই এনজিও ঘটকালির বা আগ্রাসী বিদেশ সমূহের আইটেম এখন আমরা মিডল ক্লাসরাই। এইটা বিপদের কথা।
২.
সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির টিকা থাকার জন্য অদরকারী অস্ত্র এবং অপ্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও প্রডাক্ট বিক্রি করতেই হয় গরীব দেশগুলিতে। এর বিরুদ্ধে সেসব দেশে যাতে ব্যাপক কোনো আন্দোলন দানা বাঁধতে না পারে তার ব্যাপারে অগ্রেই সাবধান থাকতে হয় তাদের।
এই সাবধানতারই একটা সাংস্কৃতিক পদ্ধতি হইতেছে সেসব দেশের আর্টিস্ট, গায়ক, সাহিত্যিকদের সঙ্গে মেলামেশা করা। তবে গায়ক-গায়িকাদের ক্ষেত্রে আগে তাদের বাছাই ছিল গরীব কিন্তু প্রতিভাবান বা ময়ী শিল্পীরা।
৩.
আমার অভিমত হইল, ভিনদেশী সওদাগরদের সঙ্গে মিশ্রণে আগ্রহী শিল্পীরা যদি গরীব হয় তাইলে কম সমস্যা, এবং শিল্পীরা যদি মিডল ক্লাস হয় তাইলে অনেক বিপদ।
যারা রাহুল আনন্দ ও তার গান পছন্দ করেন, তারা ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ যদি বাংলাদেশের কাছে অপ্রয়োজনীয় এয়ারবাস বিক্রি ও অপ্রয়োজনীয় পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব করেন তার বিরোধিতা কী কারণে করবেন?
"রাহুলের বাসায় মাঁখো আইছে!" সেই আনন্দে তো তারা গড়াগড়ি খাইতেই আছেন!
৪.
গরীবের বাড়িতে গান শুনতে গেলে মধ্যবিত্তরা অন্তত গরীব ঘৃণার কারণেই কিছুটা হইলেও মাখোঁর বাণিজ্য সফরের বিরোধিতা করতেন।
১১/৯/২০২৩