অ্যাকটিভিস্টদের ভদ্রতা ও বিনয় নামক মাতব্বরি থিকা সাবধান
ভাষা নির্ভর অ্যাকটিভিটি করে যেই অ্যাকটিভিস্টরা—মানে বুদ্ধিজীবীরা—তারা ভদ্রতা অর্থাৎ প্রমিত আচরণ ও ভাষারেই 'যুক্তি' বইলা দেখায় ও দেখাইতে তৎপর থাকে।
তাদের প্রমিত জোটবদ্ধতাই যেন যুক্তি—এই রকম উপস্থাপনের ক্ষেত্রে অ্যাকটিভিস্ট গোষ্ঠীর মধ্যকার পারস্পরিক বিনয়, সহনশীলতা ও ভদ্রতা করাকরি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে। বিরোধী কণ্ঠগুলিরে দাবাইয়া রাখে এই সম্মিলিত ভদ্রতা বিনিময় অনুষ্ঠান।
গালাগালি, অশ্লীলতা, চণ্ডাল ভঙ্গি, পরনিন্দা ও ঘৃণা এগুলি থাকলেই যে কারো যুক্তি নাই এমনটা কী কারণে ভাবেন আপনি?
গালাগালি যে অনেক সময়ই যুক্তির অভাব পূরণের হাতিয়ার সেইটা মাথায় রাখার যেমন দরকার আছে, তেমনি গালাগালি মানেই যুক্তিহীনতা তেমনটা না ভাবারও প্রয়োজন—আছে।
অর্থাৎ অযুক্তিরে সর্বদা গালাগালির সঙ্গে আর ভদ্রতারে সর্বদা যুক্তির সঙ্গে মাখামাখিময় দশায় না ভাবলেই আপনি সচেতন থাকতে পারবেন।
এর বিপরীতে যাদেরই প্রমিত ভাষা ও উপস্থাপনের সমাজ ও ইতিহাস আছে, বিশেষত যারা মিডিয়ায় প্রমিত রীতিতে সর্বদা উপস্থাপিত হয়, তাদেরকে যুক্তিপূর্ণ মনে করাটা সমাজের অর্থনৈতিক গরিবীর আশু ফলাফল।
ভদ্রতা এমন পরিস্থিতি তৈরি করে যে, যাদের ভুল চিন্তার কারণে বিশাল জনগোষ্ঠী নির্যাতিত, নিবর্তিত (নিবৃত্ত) ও উপেক্ষিত হয় তাদের হাতে যদি প্রমিত ভাষা থাকে তবে আর সমস্যা নাই!
এই "সমস্যা নাই" দৃষ্টিভঙ্গির গণ গ্রহণযোগ্যতার কারণেই সর্বজন গৃহীত রবীন্দ্রনাথ থিকা শুরু কইরা আরো বহু কর্তৃত্বপরায়ণ শিক্ষিত গণবিরোধীরা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা লইয়া বুদ্ধিবৃত্তিক রাজত্ব করতে পারে।
মৃত্যুর আগে প্রমিত ভাষা ও বিনয়ী আচরণের মাধ্যমে এবং মৃত্যুর পরে প্রমিত ভাষার রচনা সামগ্রী দিয়া।
ভাষা বা আচরণের মিষ্টত্ব এগুলি ব্যক্তিগত অভিরুচির বেশি কিছু না। কিন্তু এগুলিরে এরা সবার ক্ষেত্রে মাস্ট বা অতি আবশ্যক কইরা তুলতে চায়! কেন এই রকম চায় তারা? কেন তারা বলে "রুচির দুর্ভিক্ষ!" কেন সবাইকে ভদ্র, বিনয়ী ও ঘৃণাহীন হইয়া উঠতে হবে?
কারণ ভদ্রতা ও প্রমিত পাটাতনের তলায় সকল অনিষ্টরে চাপা দিতে চায় এরা। ফ্যাসিবাদরে লুকাইতে চায় সাংস্কৃতিক ভাবগাম্ভীর্যের চাদরের অন্তরালে।
এরা, এই রুচির মাবাপেরা, কোন কোন অভিসন্ধি মূলক, অভিজাত ও অন্যায় চিন্তা দিয়া লক্ষ মানুষের ক্ষতি করতে পারতেছে সেসবের তালিকা করা দরকার।
তালিকা দরকার, কারণ তা সাধারণ মানুষের কাছে সহজে বোধগম্য হয়। কারণ মানুষ তালিকারে গ্রহণ বা বর্জন করতে পারে সহজে।
প্রমিত গোষ্ঠীর উৎপাদিত ক্ষতিরে তাদের প্রমিত ভাষা, সামাজিক অবস্থা, সুন্দর বচন ও সুন্দর আচরণ আড়াল করতেছে কিনা তা কি আপনি লক্ষ্য করতেছেন?
নাকি এখনও প্রমিত উচ্চারণ রীতি রপ্ত করার কুস্তি কইরা যাইতেছেন!
১৭/৭/২০২৩