সফট ফ্যাসিবাদের ব্যাপারে সাবধান!
ড. আসিফ নজরুল সাহেব আতিউর রহমানের এমিরেটাস অধ্যাপক হিসাবে নিয়োগ নিয়া আক্ষেপ করলেন যে আমাদের কালেকটিভ মোরালিটি অনেক নিচে নেমে গেছে। নাইলে এই ধরনের কাণ্ড হয় কীভাবে?
তিনি লিখছেন, "বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা লুটের সময় আতিউর রহমান এর দায়িত্বে ছিলেন। তিনি এই লুট ঠেকাতে অনীহ বা ব্যর্থ ছিলেন।
দেশে-বিদেশে প্রবলভাবে নিন্দিত এই দূর্নীতির ঘটনার দায় অবশ্যই তারও। এই মানুষটাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমিরেটাস অধ্যাপকের মর্যাদা দিয়েছে।"
তিনি আরো লিখছেন, "আমি অনেকদিন অপেক্ষা করে দেখলাম কেউ প্রতিবাদ বা নিন্দা করে কিনা। খুব কমই পেলাম।
আমাদের কালেকটিভ মোরালিটি সম্ভবত অনেক নীচে নেমে গেছে বা সহ্য ক্ষমতা অনেক বেড়ে গেছে।"
আমি দেখাইতে চাইতেছি, আসিফ সাহেবের এই আক্ষেপকে গণতান্ত্রিক মনে হইলেও এই আক্ষেপ আসলে ফ্যাসিবাদী আক্ষেপ।
২.
তিনি দেখাইতে তৎপর, যেন ঢাকা পবিত্র বিশ্ববিদ্যালয়টিতে লুটের সরকারের ছাত্রবাহিনী বিরাজ করতেছে না! যেন সরকার ওই ক্ষেত্রটিকে লুটপাটের বাইরে খুব 'গণতান্ত্রিক' করে রেখেছেন--কাজেই অন্য লুটপাটের সহযোগীরে এই লুটপাটের রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া যাবে না! হাঃ হাঃ।
ব্যাংকগুলি যেমন লুটপাটের ক্ষেত্র, বিশ্ববিদ্যালয়টিও তেমনই সরকারের স্বেচ্ছাচারের আখড়া। শিক্ষার্থীদের জীবন, মান ও মেধা নষ্ট করার অর্থনৈতিক গচ্চার হিসাবে করতে বসলে এরও ক্ষতি হাজার কোটির কম হবে না। অথচ আসিফ নজরুল হুদাই একটার চাইতে আরেকটারে গণতান্ত্রিক দেখাইতে তৎপর হইছেন। কারণ কি এই যে, ওইখানে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে, উনি আছেন--তাই তা মোর গণতান্ত্রিক?
৩.
ড. কনক সরওয়ার সাহেব একটা ভিডিও আলোচনায় বললেন যারা দুর্নীতিবাজ তাদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট করতে হবে বা তাদের দরজায় লিখতে হবে চোর, তাদের ছেলেমেয়েদেরকে চোরের ছেলেমেয়ে বলতে হবে!
এই ধরনের কিছু বললেন উনি।
হুবহু কোট করার প্রয়োজন নাই।
আমি আসিফ এবং কনক দুই জনরে বাদ দিয়াই যেহেতু আলাপ করতে চাইতেছি।
ওনারা বাদ। এখন আপনারা বলেন আপনাদের মধ্যে অনেকেরই তো এই রকম মতামত, তাই না?
৪.
কালেকটিভ মোরালিটি দিয়া আইনের শূন্যতা পূরণ ও দুর্নীতিবাজদের একঘরে করার যে পন্থা এগুলিও ফ্যাসিবাদী পন্থা।
ভাল কিছু করার জন্যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অধিকারকে অবজ্ঞা বা হেয় করার ফ্যাসিবাদ।
যারা সত্যি ভাল কিছু করতে চাইতেছেন তাদেরকে এই রকম ছদ্মবেশী সফট ফ্যাসিবাদ থিকা মুক্ত থাকতে হবে।
আপনারা তো এখন জানেন, আওয়ামী লীগ সরকারের যে ফ্যাসিবাদ তারও শুরু হইছিল এই রকম কালেকটিভ মোরালিটি দিয়া।
সেই মোরালিটির তখন নাম ছিল গণজাগরণ মঞ্চ।
কাজেই যখন এক ফ্যাসিবাদ উৎখাতের লড়াই করতেছেন আপনারা তখন চিকনে ও চামে চিপা দিয়া এইসব ফ্যাসিবাদরে ঢুকতে দিয়েন না ঘরে।
শুরু থিকাই এগুলির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকেন।
ব্যক্তির অধিকার ক্ষুণ্ন করতে গিয়া কালেকটিভ মোরালিটিরে অস্ত্র কইরেন না।
৫.
ডক্টর হওয়া কত সোজা দেখতেই পাইতেছেন!
৭/৮/২০২৩