১.
একুশের বইমেলা পাঠক বা ক্রেতাকে উপলক্ষ কইরা শুরু হয় নাই।
এবং ক্রেতাদের কাছে বই বেচাই এই মেলার প্রধান কাজ না।
এবং এখন যদিও এই রকম আছে, ভবিষ্যতে তা থাকতে দিব না আমরা। আমরা এই ধারা বদলাইয়া দিব।
২.
ভবিষ্যৎ একুশে বইমেলা আমরা লেখকদেরকে কেন্দ্র কইরা গইড়া তুলব। প্রকাশক ও পাঠকরা থাকবেন দ্বিতীয় ও তৃতীয় গুরুত্বে। আপনারা লেখক তৈরিতে সহযোগিতা করবেন।
মনে রাখবেন লেখক নাই তো আপনারাও নাই।
৩.
একুশের এই বইমেলার যাত্রারম্ভ একুশ বা বায়ান্নর ২১ ফেব্রুয়ারিরে স্মরণ রাইখা। অর্থাৎ ভাষা বা বাংলা ভাষা এই মেলার মূল থিম। বই বেচা দ্বিতীয় কার্য মেলার।
কেন প্রকাশক ও পাঠকেরা পরের দিকে এবং লেখকেরা অগ্রে তা এ থিকা নিশ্চয়ই বোঝা যাইতে পারে।
লেখকেরা জাতির মনোগঠন তৈরি করে, জাতির সংস্কৃতি ও কল্পনারে সাজাইয়া তোলে, জাতির ভবিষ্যৎ রচনা করে তারা। তাই যে জাতি নিজ ভাষার লেখকদের অসম্মান করে সে জাতি অধঃপতিত হয়, আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয় তারা।
এই সম্মান করার জন্যে কট্টর জাতীয়তাবাদী হইতে হয় না। মনে রাখবেন, 'আন্তর্জাতিকতা' কোনো অবস্থান না, একটা দৃষ্টিভঙ্গি মাত্র। এইটা জাতি বা দেশগুলির বিরোধিতায় সক্রিয় একটা শূন্য জায়গা।
৪.
এই মেলারে ব্যবসা প্রধান মেলা বানাইতে যারা চাইতেছেন বা "আমার আন্তর্জাতিক যে বই কিনার ইচ্ছা তা এই মেলা থিকা কেন কিনতে পারব না" বিশ্বগীতি যারা গাইতেছেন, তারা দেশের লেখকদের বিরুদ্ধে দাঁড়াইতেছেন, তাদেরকে অসহযোগিতা ও অসম্মান করতেছেন।
ক্রেতা-পাঠক হিসাবে বাংলা ভাষায় আপনার কী অবদান যে আপনি ভাষা সংক্রান্ত একটা মেলায় এমন দাবি করতেছেন?
আপনাদের বিশ্ব বইমেলা আপনারা অন্য কোথাও গিয়া স্থাপন করেন না কেন?
৫.
আমরা যারা বাংলা ভাষার লেখক-কবি এইটা তাদেরকে সংযুক্ত করার মেলা। যেহেতু এই মেলা বাংলা ভাষা সংক্রান্ত।
এবং আমরা প্রতিদিন বাংলা ভাষা তৈরি করি। লালন করি, প্রতিপালন করি।
৬.
বাংলাদেশের লেখকদের বাদ দিয়া পশ্চিমবাংলা বা ইন্ডিয়ার লেখকদের অর্থ উপার্জন বা প্রচারের দায়িত্ব কেন নিবে একুশে বইমেলা?
ইন্ডিয়ার বই কিনতে চান তো প্রথমা, বাতিঘর, পাঠক সমাবেশ ও তক্ষশীলায় কেন যান না আপনারা?
বিশ্বাস করেন মিশনারী এই দোকানগুলি ছোট ছোট পশ্চিমবাংলা একেকটা। আপনারা সেথা হইতে প্রাণ ভইরা ও পকেট খালি কইরা বই কিনতে পারবেন।
৭.
আমাদের লেখক সমাজের প্রতি অবহেলা নিয়া আপনি যেই পাঠকসত্তা তৈরি করতেছেন তারে এন্টারটেইন করাটা আমাদের কাজ না। 'আমাদের' বলতে লেখকদের। যারা এই বইমেলার মূল মালিক ও প্রাণভোমরা।
২৭/২/২০২৩
একুশের বইমেলা কার?
কথাগুলো খুব ভালোলাগলো। সহমত রাইসুদা।
এই কথাগুলা ভালো লাগছে। বইমেলাকে বাণিজ্যমেলার মতন মনে করলে সমস্যা।