"পরচর্চা নয়" মার্কা পশ্চিমা কারেক্টনেস কেন খারাপ
পরচর্চা বা অন্যের নিন্দা ও সমালোচনারে যারা বন্ধ করতে চান তারা মূলত পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণবাদের চর্চা করেন।
আমরা জানি, পশ্চিম তার অবিচার, নির্যাতন, গণখুন, চুরি, ডাকাতি ও রাহাজানি দিয়া উন্নতির শীর্ষে পৌঁছাইছে।
এখন তারা সেই দাগ মুছতে চায়। তারা চায় তাদের অতীত পাপের সমালোচনা রুদ্ধ করতে।
অনুশোচনার কারণে তারা তা করতে চায়, এমন না।
পশ্চিম চায় যাতে এশিয়ান ও আফ্রিকানদের মধ্যে প্রতিশোধের বোধই তৈরি না হয়। এবং যতটুকু বোধ অবশিষ্ট আছে যেন তাও ধীরে মুইছা যায়।
এই গণনিয়ন্ত্রণের একটা প্রজেক্ট হিসাবে পশ্চিম এই দুই মহাদেশে এনজিও বসাইয়া ও সংস্কৃতি রপ্তানি কইরা এশিয়া ও আফ্রিকার নেটিভদের আচরণবিধি শিখাইতেছে, তা বহুদিন হইল।
এই জিনিসের রপ্তানি মহামারীর মত কইরা বাড়ছে নাইন ইলেভেনের পরে।
এতদিনে গরীব দেশের ছাত্র, শিক্ষক, আর্টিস্ট, গায়ক, অভিনেতা, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, অ্যাকটিভিস্ট ও মানবিকতাবাদীরা পশ্চিমের প্রায় সকল কারেক্ট আচরণই রপ্ত কইরা উঠতে পারছেন দেখা যায়।
এবং এই নব্য ফেরেশতারা নিজেরাই নিজেদের দেশের লোকদেরকে এখন পশ্চিমা মানবিকতা, এটিকেট ও কী করা যাবে না শিখাইতেছেন!
২.
আগে শ্রেষ্ঠত্বের অন্য মাপকাঠি ছিল, এখন পশ্চিম মানবিক গুণাবলীর নতুন মাপকাঠি তৈরি কইরা সেই বাঁশের আগায় বসছে। যারা বুঝতে পারেন না তাদেরকে বলি, এইটা নব্য বর্ণবাদ।
দেখবেন, সব সময় মাপকাঠি তৈরি করবে পশ্চিম। এবং বান্দরের মতো এশিয়ান ও আফ্রিকান বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপক ও অ্যাকটিভিস্টরা সেই মাপকাঠির থিওরি ধইরা লাফাইতে থাকবে--এইটাই রীতি।
এখন প্রায় সব বুদ্ধিবৃত্তিক এশিয়ান ও আফ্রিকানগুলি পশ্চিমা মানবিকতার ও পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের মাপকাঠিতে নিজেদের আঁটাইতে ব্যস্ত।
ভাল আচরণ, ক্ষমা তথা শান্তি শিখানোর এই কামে পশ্চিম সর্বাধিক ইউজ করে "সবই ভাল" খাওয়ানোর রহস্য পুরুষ জালালুদ্দিন রুমীকে।
রুমীর আভিজাত্যবাদী আলগা ফিলসফি ক্রোধে উন্মত্ত মুসলমানদের নিবৃত্ত করার মাধ্যমে পশ্চিমাদের শান্তির তথা ঘুমের ব্যবস্থা কইরা দেয়।
তো মুসলমানরে দিয়া মুসলমানদের টাইট দেওয়ার কাজটা পশ্চিম করে প্রথমত রুমী ও দ্বিতীয়ত সুফিবাদ দিয়া।
৩.
পরচর্চা অবশ্যই করতে হবে। অন্যের কাজের সমালোচনা না করতে বলাটা অরাজনৈতিক হওয়ার প্রস্তাব।
পরচর্চা বুঝতে সাহায্য করে কে আপনাকে ভোগাইতেছে বা আপনার মানসিক অশান্তির কারণ কে বা কারা।
কারা তাদের প্রাচুর্য ও সাফল্য দিয়া সমাজে শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে, আপনাকে অস্থির কইরা তোলে ও তার বিকৃত আনন্দ ভোগ করে।
আপনি হয়ত বুঝতে পারেন না কেন আপনার এই অশান্তি, যার নিবৃত্তি ঘটে পরচর্চার মাধ্যমে।
না বুইঝাই সমষ্টির তরফে শত্রু বাছাইয়ের অর্গানিক পন্থা পরচর্চা। সে কারণেই সফল লোকদের মধ্যে পরচর্চা বিষয়ে এত ভীতি।
সাফল্যের কারণে সৃষ্ট অবজ্ঞার বা পাত্তা না দেওয়ার যেই পতাকা তারা লুকাইয়া রাখতেছেন, পরচর্চা তার যুক্তিহীনতার কারণেই তা সামনে নিয়া আসতে পারতেছে।
যুক্তির বিজনেস করতে গেলে আপনাকে অবজ্ঞা করার তাদের লুকানো সামাজিক মেশিন লুকানোই থাকতে পারত। পরচর্চা তা পাবলিক কইরা দেয়!
প্রাচুর্য ও সাফল্যে সন্দেহ মিশ্রিত হয়, কম্যুনিটিতে তার মূল্য কইমা আসে।
আপনি পরর্চচার মাধ্যমে সফলদের অস্ত্র ও ভূষণ 'অবজ্ঞা' বিষয়ে নিজেরে নিরাপদ ও ফাঁকহীন কইরা তুলতে পারেন। তাদেরকে নামাইয়া আনতে পারেন নিজ সমতলে।
১৫/৯/২০২৩