১.
"আপনাকে আমার একটা বই দিতে চাই"—এইটা খানিক অভদ্র একটা আলাপ, যদি অপরিচিতজনদের কাছ থিকা আসে।
বরং তিনি অনুরোধ করতে পারেন, যে আমি বই উপহার দেওয়ার অনুমোদন তারে দিব কিনা?
উপহার বিনা অনুমোদনে বা জোর কইরা দেওয়াটা প্রাইভেসি ও রুচির লংঘন। আগে জিগাইতে হবে তিনি প্রস্তাবটা করতে পারেন কিনা।
যে বই আমি নিজে থিকা নাও কিনতে পারি সে বই আমারে দেওয়ার অর্থ আপনি আমার সময় নষ্ট করার অনুমতি চাইতেছেন।
আমি আমার সময় নষ্ট করতে দিতে রাজি হইতেও পারি। সেই ধাপটা আপনাকে অতিক্রম করতে হবে। জিগাইয়া।
২.
বইমেলায় কিছু প্রকাশকের দোকানে সেলিব্রিটিদের বা বই লেখকদের বসার জন্য আরামদায়ক সোফা বসাইয়া রাখছেন নামি প্রকাশকরা। ক্রেতা-পাঠকদের সেইখানে বসার সুযোগ নাই বা বারণ। সাইনবোর্ড লাগাইয়া বারণ যে তা না, পরিস্থিতি এমন যে ওই জমিদারি সোফারে সমীহ করতে বাধ্য ক্রেতা-পাঠকরা। তাদেরকে একটা অধিকারহীনতার অনুভূতি দেয় এই সোফাসেট।
বইমেলা কর্তৃপক্ষের উচিত এই অসম সিংহাসন ব্যবস্থার পুনর্মূল্যায়ন করা। হয় সকলের বসার জন্যে সোফার ব্যবস্থা করো, নয় এই ব্যবস্থা উচ্ছেদ করো।
আমি একজন মোটামুটি নামকরা বইহীন লেখক, এবং সিনিয়র লেখকদের সংখ্যা বিপজ্জনক ভাবে কইমা আসছে তাই আমরাই এখন সিনিয়র লেখক, তাই সেইসব দোকানে ঢুকলেই আমারে বসার জন্য অনুরোধ করেন দোকানের কর্তৃপক্ষ বা ওইখানে বইসা থাকা লেখকেরা। প্রকাশক বা তাদের প্রতিনিধিরা ক্রেতা-পাঠকদের না দিয়া তাদের সামনে লেখকদেরকে চা খাইতে দেন। ক্রেতাদের সামনে লেখকদের আলাদা ও বেটার ট্রিটমেন্ট নেওয়াটা আমার কাছে অশ্লীল লাগে। সুবিধা গ্রহণের মতো মনে হয়।
আমি ক্রেতা-পাঠকদের সঙ্গে সেলিব্রিটি ও লেখকদের এই দূরত্ব রচনার ঝোঁকরে সমস্যাজনক মনে করি।
২১/২/২০২৩
Comments
No posts