সুরুচি ও কুরুচির মিলন, কবে হবে
হিরো আলমরে কেন এইবার টাইট দেওয়া গেল না অথবা সুরুচি ও কুরুচির মিলন হবে কত দিনে ~
প্রথম আলোর রিপোর্টে দেখা যাইতেছে ‘সংস্কৃতির সংকট: রুচির দুর্ভিক্ষ’ আলোচনা সভায় এফটিপিও'র বক্তারা রাজনীতি দিয়া রুচি ধোলাই করার খোলা আহ্বান জানাইছেন। তারা বলছেন:
• ‘রুচির সংকটটি আসলে রাজনৈতিক সংকট’
• ‘সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা না থাকলে এ ধরনের সমস্যা সমাধান করা কঠিন’
• ‘পরিবর্তন আনতে হবে রাজনৈতিক চর্চার মধ্যে’
• ‘রাষ্ট্র ছাড়া এ ধরনের সমস্যার সমাধান করা যাবে না’
ইত্যাদি।
অর্থাৎ তারা সরকারের শরণাপন্ন হইছেন। এই ব্যাপারে কোনো রাখঢাক তারা করতেছেন না আর।
কুরুচি বিরোধী এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হইছে এপ্রিলের ৪ তারিখ সকালে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার রুমে।
বক্তৃতা করছেন 'ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন' এর সম্মানিত বক্তারা।
২.
যাদের সামান্য অনুরোধে সরকার আগে অনেক কিছু করত, এখন কেন সরকার সামান্য রুচির প্রশ্নে তাদের অনুরোধ, আহ্বান, আহাজারিরে আর পাত্তা দিতেছে না?
কী আসলে ঘটছে? বা কী ঘটবে যে তারা পাত্তা পাইতেছেন না আর?
জিনিসটা অবশ্যই পলিটিক্যাল।
৩.
দৃশ্যমান ঘটনা হইল, এইবার আর হিরো আলমরে ডাকাইয়া নিয়া গিয়া টাইট দেওয়া যায় নাই।
সে কারণেই এফটিপিও'র এই বিষয়ে মিটিং পর্যন্ত বসাইতে হইল!
সম্ভবত প্রশাসন তাদের কথা আর শুনতেছে না, হিরো আলম বিষয়ে।
কেন শুনতেছে না?
৪.
আসেন এই বিষয়ে আমরা জনকণ্ঠের পয়লা এপ্রিলের রিপোর্ট কী কইতেছে সেইটা দেখি।
"শনিবার (১ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে ব্যক্তিগত সমস্যার অভিযোগ নিয়ে হিরো আলম ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে দেখা করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর বিকেল ৫টার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
হিরো আলম বলেন, হারুন স্যার (হারুন অর রশীদ) অনেক ভালো মানুষ। তিনি আমার অভিযোগ শুনেছেন। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া আগামী নির্বাচনে আমাকে সহযোগিতা করবেন বলেও আশ্বস্ত করেছেন।"
হিরো আলম আর কী বলছিলেন? জনকণ্ঠ জানাইতেছে:
"তিনি বলেন, ডিবিতে আমাকে ডাকা হয়নি। আপনারা দেখেছেন, চলচ্চিত্রের কিছু লোকজন আমাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় নানা ধরনের কথা বলছেন। আগে আমাকে কেউ বকা দিলেও প্রতিবাদ করতাম না। কিছু চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও অভিনেতা-অভিনেত্রী আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের কথা ছড়াচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে আমি লিখিত অভিযোগ নিয়ে এসেছিলাম।"
হিরো আলম বলেন, “সব মিলিয়ে আমি নিজেই এখানে এসেছিলাম।”
কেন হিরো আলমরে টাইট দিতে ব্যর্থ হইলেন নাটক সিনেমার লোকেরা? এমনকি স্বর্ণ আরাভ ঘটনার মত একটা নিন্দনীয় জিনিসের লগে হিরোর যোগ থাকার পরেও! হোয়াই?
তাদের চাইতে প্রশাসনের কাছে কেন হিরো আলমের গুরুত্ব বাইড়া গেল?
৫.
হিরো আলম আমাদের, গণতন্ত্র ও নির্বাচন মনাদের, জানাইছেন যে আগামী নির্বাচনে তাকে সহযোগিতা করা হবে।
কে করবে? সরকার?
হিরো আলম সামনের নির্বাচনে আওয়ামী সরকারকে যেই সার্ভিস দিতে পারবেন নাটক সিনেমার লোকেরা সেইটা দিতে পারবেন না তা জানে প্রশাসন।
ফলে হিরো আলম বিষয়ে পাবলিক সেন্টিমেন্ট তৈরির মুক্ত আলোচনার নাটক করা ছাড়া আর কীইবা করবেন ওনারা।
দেখার বিষয়, প্রশাসন বা আওয়ামী সরকার কী কৌশলে হিরো আলম ও মামুনুর রশীদদের এক নৌকায় নিয়া আসে।
নিয়া যে আসা হবে সেই ব্যাপারে আমার কোনো সন্দেহ নাই।
খালি কীভাবে আনা হবে তা এখনো আন্দাজ কইরা সারতে পারি নাই।
অবশ্য সেই চেষ্টাও করি নাই।
৬/৪/২০২৩