লেখার বা লেখকের স্বাধীনতা, নাকি লেখকের নারী স্বাধীনতা?
"ম্যানেল = ম্যান অনলি প্যানেল। লেখার স্বাধীনতা নিয়ে আলাপ করছেন আটজন লেখক (এদের মধ্যে আসিফ নজরুল আর ফিরোজ আহমেদ আমার অত্যন্ত প্রিয় দুই লেখক)। কিন্তু এই মঞ্চে বসার মতো একজন নারীও খুঁজে পাওয়া যায়নি? এইসব পুং-সর্বস্ব মঞ্চ বর্জনীয়।"
—তাসনিম খলিল
😀
সঙ্গের ছবিটি দেখাইয়া তাসনিম খলিল প্রস্তাব দিতেছেন, লেখার স্বাধীনতা নারী-পুরষ দুই পক্ষ থিকা চাইতে হবে। নাইলে তা বর্জনীয়।
মানে ফ্যাসিবাদ বিরোধিতার মাধ্যমে লেখার স্বাধীনতা চাইতে হইলে আগে নারী-পুরুষ সাম্য কইরা তারপরে তা চাইতে হবে। আবদার আর কি!
নারীরা তাদের লেখার স্বাধীনতা চাইছে এবং তা আলাদা ভাবে না চাইয়া পুরুষদের সঙ্গে লইয়া চাইতেছে এই রকম দৃষ্টান্ত পাইছেন কেউ? আমার মনে হয় তা পান নাই।
কেন লেখার স্বাধীনতা নারীদের পুরুষদের চাইতে আলাদা ভাবেই পাইতে হবে তা এখন বলি।
আপনারা জানেন, অন্তত নারীরা, যে নারীদের লেখার স্বাধীনতা না থাকাটা নিশ্চিত ভাবে পুরুষের চাইতে আলাদা ও কণ্টকাকীর্ণ একটা অবস্থা। তাইলে তারা নিজেদের লেখার স্বাধীনতা নিজেরা না চাইয়া কেন পুরুষের আশ্রয়ে তা পাইতে চায়?
ভাবছেন কি? হোয়াই এইটা এই রকম? কেন নারী পুরুষের সঙ্গে মিল্লা স্বাধীনতার আওয়াজ তুলতে চায়?
যেইখানে নারীর লেখার স্বাধীনতার জায়গায় পুরুষ একটা বড়সড় বা প্রধান অন্তরায়। নারীর লেখার স্বাধীনতা না থাকাটা সবার আগে একটা পুরুষজনিত সমস্যা।
কাজেই পুরুষদের সঙ্গে মিলামিশা লেখার স্বাধীনতা চাওয়ার উপায় নাই নারীর। এইটা ছলনা হবে।
নারী-পুরুষ অনুপাত সাজানোর খেলায় নারীদের লইয়া প্যানেল তৈরি একটা ফাঁকিবাজি বা জোচ্চুরি হবে পুরুষদের। যদি না সেই নারীরা নিজেদের লেখার স্বাধীনতারে অবজ্ঞা কইরা বুর্জোয়া ধরনে একটা সর্বমানবীয় লেখালেখির স্বাধীনতা চাওয়ার ধান্ধা করে।
লেখার স্বাধীনতার প্রশ্নের বাইরে নারী ও পুরুষ উভয়ে আলাদা আলাদা ভাবে, বা একসঙ্গে ফ্যাসিবাদ বিরোধিতা করতেই পারে।
কিন্তু যখন আক্রান্ত কোনো পক্ষ প্রতিবাদ বা বিরোধিতা করে তখন "কেন সাম্য নাই" এই আওয়াজ প্রতিক্রিয়াশীল বা প্রতিবিপ্লবী আওয়াজ।
সরকার বিরোধিতার বা ফ্যাসিবাদ বিরোধিতার সর্ব পর্যায়ে নারী-পুরুষ সাম্যের দরকার নাই।
আর যদি তা থাকে দুর্বল বা সুবিধাহীন প্রতিপক্ষ হিসাবে নারীদেরই তা আয়োজন করতে হবে।
আশ্রিত থাকার বা নারী হিসাবে পুংদলে বিশেষ সুবিধাজনক অবস্থান গ্রহণের বাসনা তাদেরকে কোনো প্রকার মুক্তি দিবে না।
তাসনিম খলিল মেয়েদের আশ্রয় দেওয়ার যে প্রস্তাব করতেছেন তা নিন্দনীয়, ও বর্জনীয়।
১২/৩/২০২৩